বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) কার্যক্রম। পরবর্তীতে দুস্কৃতিকারীদের নগর ভবনে দেয়া আগুন মরার ‘উপর খড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়ায়। এতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় নাসিকের কার্যক্রম। বিপাকে পড়ে সিটির বাসিন্দারা। পরবর্তীতে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম। এরই মধ্যে ঘোষণা আসে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অপসারণের। মেয়রের স্থানে নিয়োগ দেওয়া হয় প্রশাসক।
গত ১৯ আগস্ট সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অপসারণের ঘোষণার পর দিন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম কামরুজ্জামান। মেয়রকে অপসারণ করা হলেও সিদ্ধান্ত হয়নি কাউন্সিলরদের ব্যপারে। তাই তারা তাদের আগের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, নাসিকের সূত্রমতে, এখন আগের চেয়েও বেশি চাপ নিতে হচ্ছে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের।
তবে কিছু কিছু ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা সরকার পতনের পর পালিয়ে যাওয়ায় তারেদর পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় অনেকেই রয়েছেন আড়ালে, আবার অনেকে চলে গেছেন আত্মগোপনে। যেসব ওয়ার্ডে কাউন্সিলররা প্রতিদিন আসছেন না, সেই সব ওয়ার্ডের সচিবরা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এই বিষয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বেশ ক’জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সচিবদের।
২নম্বর ওয়ার্ড সচিব তানভীর হাসান তুহিন বলেন, আমাদের ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সব রকম সেবাই পাচ্ছে। আমাদের কাউন্সিলর সাহেবও প্রতিদিনই তার কার্যালয়ে বসেন।
৩ নম্বর ওয়ার্ড সচিব মোহাম্মদ ইমামুল হোসেন বলেন, ওয়ার্ড বাসিন্দারা আাগের মতোই সেবা পাচ্ছে। কোন বাধা নেই। কাউন্সিলর সাহেবও প্রতিদিন কার্যালয়ে আসে। আজকেও এসেছিলেন, লাঞ্চের জন্য বাড়ি চলে গেছেন।
৫ নম্বর ওয়ার্ড সচিব মোঃ নাজমুল হোসাইন বলেন, আমাদের কাউন্সিলর সাহেব প্রতিদিন কর্যালয়ে আসে। বাসিন্দারাও তাদের সেবা কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে নিয়মিত পাচ্ছে।
৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইস্রাফিল প্রধান বলেন, আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সব সেবাই পাচ্ছে। আমিও প্রতিনিয়ত কার্যালয়ে আসি। এখনও আমি কার্যালয়েই আছি।
১০ নম্বর ওয়ার্ড সচিব মোঃ আমির হোসেন বলেন, কাউন্সিলর সাহেব মাঝে মাঝে আসেন। এছাড়া ওয়ার্ডবাসীর যাবতীয় সেবা তার অনুপস্থিতিতে আমিই দিচ্ছি। সেবা প্রদানে আমাদের কার্যালয় সব সময় খোলা।
১৪ নম্বর ওয়ার্ড সচিব মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের ওয়ার্ডবাসীরা প্রতিদিন তাদের নাগরিক সেবা পাচ্ছে। আমাদের কাউন্সিলর সাহেবও প্রতিদিন কার্যালয়ে আসেন।
১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ রিয়াদ হাসান বলেন, আমাদের কার্যালয়ের কার্যক্রম ৩দিন বন্ধ ছিলো, এর পর থেকে প্রতিদিনই খোলা। আমিও প্রতিদিন কার্যালয়ে যাই। আগের তুলনায় এখন মানুষ তাদের সেবানিতে আরও বেশি কার্যালয়ে আসছেন। তাদের সেবা প্রদানেও কোন সমস্যা হচ্ছে না।
১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল করিম বাবু বর্তমানে পলাতক থাকলেও সচিব মোঃ রিয়াদ হোসেন বলেন, কাউন্সিলরের অনুপস্থিতিতে এখন মানুষ কম আসছে। তবে, আমাদের সেবা প্রদানে কোন ঘাটতি নেই।
১৮ নম্বর ওয়ার্ড সচিব রিমা আক্তার বলেন, কাউন্সিলর মুন্না মাঝে মাঝে আসেন, গুরুত্বপূর্ণ যে সব স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়, সেগুলো করে যান। এছাড়া নাগরিক সেবা প্রদানে কোন রকমের সমস্যা হচ্ছে না। তবে কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মোখলেছুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমার ওয়ার্ডের কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। গত ৫ আগষ্টও আমাদের অফিস খোলা ছিলো। ওয়ার্ডবাসী আগের মতোই সেবা পাচ্ছে।
২২ নম্বর ওয়ার্ড সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, আমাদের কাউন্সিলর সাহেব প্রতিদিন কার্যালয়ে আসেন। আমাদের কার্যক্রমও আগের মতোই ভালো ভাবে চলছে, কোন অসুবিধা হচ্ছে না।
২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউছার আশা বলেন, আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবেই চলছে, এখন পর্যন্ত কোন অসুবিধা নেই।
২৪ নম্বর ওয়ার্ড সবিচ রিহাদুর রহমান অনিক বলেন, আমরা আগের মতোই নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি এবং কাউন্সিলর সাহেবও প্রতিদিন কার্যালয়ে আসেন।
২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ এনায়েত হোসেন বলেন, আমাদের কার্যক্রম আগের মতোই স্বাভাবিক ভাবে চলছে। কোন অসুবিধা হচ্ছে না।
২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সামসুজ্জোহা বলেন, আগের মতোই সব কার্যক্রম চলছে। নিয়মিত মশার ঔষধ ছিটানো হচ্ছে এবং ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করা হচ্ছে।
২৭ নম্বর ওয়ার্ড সচিব ওমর ফারুক বলেন, আমাদের কাউন্সিলর সাহেব প্রতিদিন কার্যালয়ে বসেন। নাগরিক সেবাও আগের মতো ভালো ভাবে দেওয়া হচ্ছে। কোন সমস্যা হচ্ছে না।
এদিকে, ১ ,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড সচিব জনাব মোঃ ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমার এখানে সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমানে কাউন্সিলর ম্যাডাম অসুস্থ আছেন।
৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের কাজে কোন সমস্যা হচ্ছে না। আগের মতোই সবাইকে সেবা দিতে পারছি।
৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর মহিলা দল নেত্রী আয়শা আক্তার দিনা বলেন, কয়েকজন কাউন্সিলর না থাকায় আমার কাজ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। নাগরিক সেবা দিতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না।
১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড সচিব মোঃ মাসুদ রানা বলেন, আগের মতোই আমরা নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি। কাউন্সিলর ম্যাডামও দৈনিক সময় মতো অফিসে আসেন। ১৭ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পলাতক থাকায় চাপ কিছুটা বেশি।
১৯, ২০ ও ২১নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর শিউলি নওশাদ বলেন, নাগরিক সেবা দিতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না। চাপ আগের তুলনায় কিছুটা বেশি।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেই সবার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রশাসক এএইচএম কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে সব কর্মকর্তাদের সাথে সভা করে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করছি। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিবেচনায় নিয়ে কী ভাবে নগরবাসীকে সেবা দেয়া যায়। স্বল্প, মাঝারি, দীর্ঘ পরিকল্পনায় তা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবো, এজন্য সবার সহযোগীতা চাই।
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..
Dhaka, Bangladesh বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫ ২৮ সফর, ১৪৪৭ | |
ওয়াক্ত | সময় |
সুবহে সাদিক | ভোর ৪:১৭ |
সূর্যোদয় | ভোর ৫:৩৬ |
যোহর | দুপুর ১২:০২ |
আছর | বিকাল ৩:২৯ |
মাগরিব | সন্ধ্যা ৬:২৭ |
এশা | রাত ৭:৪৫ |
আপনার মতামত কমেন্টস করুন