নারায়ণগঞ্জের আলো ২৪.কম : প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের ভয়ে যেখানে মৃত মানুষটির পাশে যেতে অনিহা করছেন পরিবারের সদস্যরা, সেখানে অসুস্থ শরীর নিয়েই এগারো জনের একটি স্বেচ্ছাসেবী দল নিয়ে করোনায় মৃত মানুষের সৎকারে নিরলস দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন রিপন ভাওয়াল। এখনো পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ২২ জন করোনায় মৃত মানুষের সৎকার করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ফোন পেয়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা থেকে শুরু করে সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিতেও কাজ করে যাচ্ছে টিম রিপন ভাওয়াল। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে মানুষের সেবায় করোনা মহামারি শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই মহৎ কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এবিষয়ে রিপন ভাওয়াল বলেন, করোনা আমাদের অনেক কিছুই শিখিয়ে দিয়েছে। আমরা এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি, যেখানে পিতা-মাতা সন্তানের কাশ কিংবা সন্তান তার পিতা-মাতার লাশ স্পর্শেও অনীহা প্রকাশ করছে। পরিস্থিতি আমাদের কতো নিষ্ঠুর হতে বাধ্য করেছে। অদৃশ্য এই ভাইরাসে আজ গোটা বিশ্ব স্তব্ধ। তবে আমরা পিছিয়ে নেই। মৃত্যু ভয়কে জয় করেই করোনা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছি। খবর পাওয়া মাত্রই করোনায় মৃত লাশ দাফন ও সৎকার করছি। ধর্মীয় নীতি মেনেই আমরা প্রতিটি ধর্মের লাশ সৎকার করছি।রিপন ভাওয়াল বলেন আমার সাথে যারা কাজ করছে তাদের তারা যদি না থাকতো তাইলে আমি এই কাজ গুলি করতে পারতাম আমি কৃতজ্ঞতা সব সময় তাদের কাছে। টিম ভাওয়ালের অন্যতম সদস্য কৃষ্ণ আচার্য বলেন, শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও রিপন ভাওয়াল যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে লাশ সৎকার করে যাচ্ছে তা প্রশংসনীয়। আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাবো। কেউ করোনায় আক্রান্ত বা ঝুঁকিতে থাকলে যদি হাসপাতালে যেতে না পারেন, আমাদেরকে জানান, আমরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিবো। রিপন ভাওয়াল,অনল পোদ্দার ছাড়াও এই স্বেচ্ছাসেবী দলে আরো রয়েছেন রুবেল ইসলাম, অনিল পোদ্দার পুলক, সুজন ভূইয়াঁ, শিশির চক্রবর্তী, কৃষ্ণ আচার্য্য, লক্ষণ সাহা, ভুলু পাল, লিটন বসাক, উৎফল বসাক, মলয় আইচ ও বিশু অধিকারী,তপু,সমির,পিন্তু সাহা। উল্লেখ্য যে, করোনার শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন রিপন ভাওয়াল। লকডাউনের সময় দিশেহারা মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী থেকে শুরু করে করোনার সংক্রমণ রোধে স্থানীয়দের মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছেন তিনি।