নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ’ পত্রিকা অফিসে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে আদালত তাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। গ্রেপ্তার আট জন হলেন- শ্যামল সাহা লক্ষণ, কৃষ্ণা ওরফে কৃষ্ণ পাল, মো. নাসির হোসেন, মো. ইব্রাহিম, লিটন দাস, মো. ফয়সাল, মো. হাসিব ও বিল্লাল হোসেন।

শনিবার রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। শুনানি শেষে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মোহাম্মদ মোহসেন এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালতে বাদী পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও আজিজ আল মামুন। এর আগে শনিবার মধ্যরাতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক জাবেদ আহমেদ জুয়েল। পরে শনিবার রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর বিকেলে তাদের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়।

এদিকে আদালতে নেওয়ার সময় গ্রেপ্তার আসামিদের ছবি তোলার সময় তারা পুলিশ হেফাজতে থেকেই সাংবাদিকদের বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিতে থাকে।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান বলেন, ‘পত্রিকার সম্পাদক জাবেদ আহমেদ জুয়েল বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অফিসে হামলা, ভাঙচুর, প্রাণনাশের হুমকি ও দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ করা হয়েছে।’

মামলায় আসামিরা হলেন- নাসির (৩৫), আক্তার নূর (৪৫), রবিন (২৯), রাতুল (২৫), মনির (২৮), শ্যামল সাহা লক্ষণ (২৬), কৃষ্ণা সাহা (২৬), মুকিত (২৯), মো. নাসির হোসেন (৩১), শাকিল (৩০), সুমন (৩১), সানি (৩২), সনেট (২৭), আন্নান (২৯), কাজল (৩২), রুবেল (২৭), সিনাফী (৩১), ফারুক (৩৫) ও ইসমাইল (৩১)।

উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ অফিসের নিচে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং সম্পাদককে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়।

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ত্বকী হত্যা মামলা নিয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি একটি সংবাদ প্রকাশ হয় পত্রিকাটিতে। সেখানে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) প্রস্তুত করা একটি খসড়া চার্জশিট নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটিতে আজমেরী ওসমানের নাম উল্লেখ করা হয়। এ কারণেই এই হামলা হয়েছে বলে পত্রিকার সম্পাদক জুয়েল দাবি করেন। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকী হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। যা র‌্যাবের প্রাক প্রস্তুত চার্জশিটে উল্লেখ ছিল।