বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন
নারায়ণগঞ্জের আলো ২৪.কম : আইপিএল ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে ফতুল্লার অলিগলিতে চলছে জুয়ার আসর। উঠতি বয়সের অনেক তরুণ এ জুয়ায় জড়িয়ে নিজে ও তার পরিবারের ক্ষতি সাধন করছে। অন্যদিকে লাভবান হচ্ছে দাদন ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, ফতুল্লার বিভিন্ন অলিগলির চায়ের দোকান, বড়-ছোট ক্লাব, ব্যবসায়ীদের গদি ঘরে জুয়ার প্রধান আসর। এমন কি বাসায় বসে মোবাইলে কন্টাক্টের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ জুয়ার আসর তো আছেই। মোবাইলে কথা হচ্ছে আর চলছে হাজার ও লক্ষ টাকার বাজি। আশপাশে লোকজনেরও বোঝার উপায় নেই কে জুয়ার সাথে জড়িত। আর লেনদেনও হয় বিকাশের মাধ্যমে বা অতি গোপনে। যার ফলে তাদের চিহ্নিত করাও কঠিন। চলতি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ (আইপিএল) এ দেশের ক্রিকেটে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে তা কিছু তরুণ যুবকদের দেখলেই বোঝা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই জানান, জুয়া খেলায় কেউ লাভবান আবার কেউ সর্বশান্ত হচ্ছে। মূলত দলের উপর থেকে শুরু করে বল, রান, উইকেট এবং এমন কি খেলোয়াড়দের উপরেও চলে জুয়া। প্রতিদিন দল বুঝে লাখ লাখ টাকার বাজি হয়ে থাকে। আইপিএল নিয়ে জুয়া খেলার জন্য কেউ কেউ স্ত্রী, মা-বোনের স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক-বিক্রি করে। আবার অনেকে সুদি করে টাকা এনে জুয়া খেলায় অংশ নেয়। খেলা শুরুর আগেই এই দর-দাম ঠিক করা হয়। কম শক্তিশালী দলের জন্য থাকে কম টাকার বরাদ্ধ। দুর্বল দলটি যদি জয়ী হয়ে যায় তাহলে বিপরীত পক্ষের কাছ থেকে সে অধিক পরিমার টাকা পেয়ে থাকে।
তথ্যমতে, ফতুল্লা ছাড়াও জেলার প্রত্যেকটি উপজেলাতেই বিপদগামী তরুণরা কম-বেশি জুয়ায় জড়িয়ে পড়েছে। আইপিএলের এই জুয়া খেলায় সমাজের ক্ষতি হচ্ছে, যুবসমাজ দিন দিন নেশাগ্রস্ত এবং চুরি-ডাকাতিতেও জড়িয়ে পড়ছে।
সূত্রে জানা যায়, ফতুল্লা থানার লালপুর, পাগলা, কুতুবপুর, আলীগঞ্জ, নন্দলালপুর, ফতুল্লা ও পাগলা রেলস্টেশন, বিসিক, ভোলাইল মিষ্টির দোকান, এনায়েতনগর, গুলশান রোড, দেওভোগ মাদ্রাসার শেষ মাথা ও এমনকি বাসায় বসে আইপিএলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নে চলছে এই জুয়া খেলা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাজিকর জানান, ‘বর্তমান সময়ে খেলাধুলা মানেই বাজি ধরাধরি। বিপিএল, আইপিএল, ফুটবলসহ প্রায় সব ধরণের খেলায় সে বিভিন্ন জনের সাথে বাজি ধরে। কখনও টাকা আসে, কখনও চলে যায়। এতে করে সে একটা অন্যরকম আনন্দ পায়।’
শুধু ফতুল্লা নয় নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি উপজেলাতেই অবলীলায় অংশ নিচ্ছে জুয়াড়িরা। যোগাযোগ হচ্ছে মোবাইল ফোনে, লেনদেন হচ্ছে বিকাশে। তবে পাড়ার অলিগলিতে স্ক্রিন লাগিয়ে ও টিভিতে ম্যাচ দেখে টাকা হাতবদল হচ্ছে সরাসরিই। প্রতিটি ম্যাচের প্রত্যেক বলে চলছে এসব জুয়া। এখন আইপিএল জুয়াকেই পেশা হিসেবে নিয়েছে কেউ কেউ। বিভিন্ন পেশার মানুষও মেতেছে এসব জুয়া খেলায়। প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে কয়েক কোটি টাকারও বেশি। জুয়ার টাকা দিতে না পারায় ঘটেছে আত্মহত্যার ঘটনাও। টাকার অভাবে কেউ কেউ দামী মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল, স্ত্রীর সোনার গহনাসহ নানা দামি জিনিসপত্র বন্ধকও রাখছে। এরপরও এসব বিষয়ে নীরব রয়েছে প্রশাসন।
সচেতন মহল মনে করেন, জুয়া খেলা রোধে প্রশাসনের পাশাপাশি পরিবারের সচেতনা বাড়াতে হবে। তার সন্তান কোথায় যায় আর কি করে এবং কাদের সাথে মিশে পরিবারকে নজর রাখতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও র্যাব এবং ফতুল্লা মডেল থানার ওসির হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল
Dhaka, Bangladesh বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫ ৪ রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৭ | |
ওয়াক্ত | সময় |
সুবহে সাদিক | ভোর ৪:২১ |
সূর্যোদয় | ভোর ৫:৩৮ |
যোহর | দুপুর ১২:০০ |
আছর | বিকাল ৩:২৭ |
মাগরিব | সন্ধ্যা ৬:২১ |
এশা | রাত ৭:৩৯ |
আপনার মতামত কমেন্টস করুন